Tuesday, February 11, 2014

ন্যাশনাল স্যালন


প্রথম ন্যাশনাল স্যালন বা আমাদের ব্যাঙ্গাত্মক ভাষায় ‘সাঁলো’ অরগানাইজ করার কয়েকমাস আগেও আমরা জানতাম না স্যালন মানে কি। এক স্যালনে হুট করে চলে গিয়ে সব দেখে শুনে মনে হল আমরাও তো পারি!

যেই ভাবা সেই কাজ কি আর করা যায়! ভাবার পরে আসে পারমিশন জোগাড়ের ব্যাপার-ওয়েবসাইট নামানোর ব্যাপার-সাবমিশন কালেক্ট করার ব্যাপার- সর্বোপরি ব্যাপারটার জাজমেন্ট ও এক্সিবিশনের ব্যাপার।

বিভু’দা আমাদের ইন্টারনেট গীক, স্নান(!) খাওয়া কাটিয়ে রাত জেগে খেটেখুটে একটা ওয়াবসাইট নামিয়ে দিয়েছে। প্রিয়ম’দা বা স্যালনের লিফলেটে ভুলে যার নাম এসেছে ‘প্রিয়া মিত্র’ তার দায়িত্ব ছিল ছবি জমা ও যাবতীয় দরকারি (+বিরক্তিকর) কল রিসিভ করা। আমরা অবশ্য বলেছি ভালোই হয়েছে নামটা এভাবে এসে। লোকে অন্তত এক সুকন্ঠী তরুণীর সাথে কথা বলার আশায় হলেও কল করবে! অর্পন’দা তো ছিলই তার ম্যাজিকাল পাওয়ার অফ ডিলিং উইথ মানি নিয়ে। অর্পন’দা নিয়ে অদূর ভবিষ্যতে লোকে বলাবলি করবে- এক ট্রেজারার ছিল এক ফটোগ্রাফি ক্লাবের। সে এক হাজার এক টাকার এস্টিমেট দিলে এক হাজার এক টাকাই লাগত। আসলেই ব্যাপারটা প্রায় সেরকমই!

আমার আর সওরিয়ার ঘাড়ে তেমন কিছুই পড়ে নি- গিফট র‍্যাপ করার দায়িত্ব ছাড়া।চকলেটের বক্স অন্যের জন্য প্যাকেট করা ভীষণ কষ্টের! আশা করি সেটা আমরা ভালো মতই করেছি।

 

অবশেষে এল সেই দিন। জাজমেন্টের দিন। জাজমেন্ট চলছে একদিকে- অন্যদিকে আমাদের রংতামাশা। আগে আমি ভাবতাম সিরিয়াস অবস্থায় বোধয় শুধু আমারই হাসি পায়। এখন দেখছি আমি হাউজ অফ ইনসেনিটি তে চলে এসেছি। এখানে সবাই আমার মত!

এরপর এল বিচারকদের খাওয়ানোর পালা।

আমাদের মেন্টর দেবাশীষ মৈত্র স্যারকে বলা হয়েছিল কয়েকটা গ্লাস আর ভাতের হাতা দিতে। উনি নিয়ে এসেছেন ডালের হাতা! কি আর করা যায়, শেষে বিচারকদের সে দিয়ে ভাত দিতে হয়েছে। সেই অসম সাহসিকতার কাজটি সওরিয়া করেছে (না হেসে ওনাদের সামনে ঐ হাতা-সহ ভাতের প্লেটটা রেখে আসার)

খাওয়া শেষে আবার বিচারপর্ব। তখন আমার ঠান্ডা লাগায় আমি একটু হস্টেলে গেছিলাম চাদর নিয়ে আসতে। ফিরে দেখি আমি একটা বিভাগে প্রথম হয়ে বসে আছি (মনোক্রোম বিভাগে) পুরো তব্দা লাগা অবস্থা! (অতি অবাক হয়ে ভাষাহীন হয়ে যাওয়াকে আমার আঞ্চলিক ভাষায় তব্দা লেগে যাওয়া বলে)

 

যাই হোক সবার খোঁচানোর আড়ালে লুক্কায়িত অভিবাদন তখন ভালোই লাগছিল! বিচারকরা আমার সামনেই আমার সব ছবিকে ক্রিটিসাইজ করলেন! সেটা একটু উইয়ার্ড ছিল বটে!

সন্ধ্যায় হাল্কা স্ন্যাক্সের পরে বিদায়ের আগে বিচারকদের গিফট দিলাম ও গ্রুপ ফটো তোলা হল। সবাই বেরিয়ে যাওয়ার সময় দেখা গেল একটা প্যাকেট বেশি কিন্তু সবার হাতেই গিফটের প্যাকেট আছে! পুরো শার্লক হোমস হয়ে সবাই কেস সল্ভ করতে বসে গেলাম। দেখা গেল দেবাশী স্যার খাবারের প্যাকেটটাকে গিফট ভেবে নিয়ে চলে যাচ্ছিলেন! কেস সল্ভড হলেও একটু দুঃখ তো ছিলই- সেটা একটা চকলেটের বক্স না মারতে পারার দুঃখ!

রাতে স্লেটার হলে বসেই কিংশুক’দার ট্রিট। হাজীর বিরিয়ানি। আমার ধারণা বিভু’দার হাজি বিরিয়ানি এডিকশন সেখান থেকেই শুরু (প্রতিদিন দশবার করে হাজি হাজি করে আর সবাইকে হাজি বিরিয়ানি খেতে যাওয়ার জন্য প্রলুব্ধ করার চেষ্টা করে!!!)

একটা ন্যাশনাল লেভেলের কম্পিটিশন এরেঞ্জ করে ফেললাম। এখন ইচ্ছা ইন্টারন্যাশনাল কিছু করার। দেখা যাক সেটা কতদূর সম্ভব হয়!

1 comment:

  1. Salon may be pronounced as সালোঁ instead of সাঁলো

    ReplyDelete